ফিতরা কেন দিতে হয় প্রকাশিত: ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০২৪ সমাজের অসহায়দের মুখে হাসি ফুটানোর জন্যই ইসলাম আর্থিকভাবে সচ্ছল মানুষের ওপর দান-খয়রাতের বিধান আরোপ করেছে। ‘ফিতরা’ আমরা যাকে শুধুমাত্র একটি দান বিষয়ে জানি, তা হলো মূলত সকালের খাবারকে বুঝায়। তবে রোজাদারের পক্ষ থেকে বিশেষ একটি দানকে সাদকাতুল ফিতর বলা হয়। সাদাকাহ অর্থ দান। শরিয়তের পরিভাষায় ‘যে দানের দ্বারা আল্লাহর নিকট সওয়াবের আশা করা যায়, তাকে সাদাকাহ বলে। মুফতিদের পরিভাষায় ফিতর অর্থ হলো রোজা না রাখা। এ অর্থেই ব্যবহৃত হয় ঈদুল ফিতর। নেসাব পরিমাণ মালের অধিকারী ব্যক্তির ওপর ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সময় যে দান দেয়া ওয়াজিব হয় তাকে সাদকাতুল ফিতর বলা হয়। ঈদের সকালে নামাজের পূর্বে। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে ঈদুল ফিতরের দিন এক সা’ খাদ্য দান করতাম।’ (বুখারী, হাদিস নং ১৫১০)। ইবনে উমার (রা.) বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকেদের ঈদের নামাজের জন্য বের হওয়ার পূর্বে ফিতরার জাকাত আদায় করার আদেশ দিয়েছেন।’ এজন্যই ঈদুল ফিতরের নামাজ দেরি করে পড়া উত্তম। যাতে ফিতরা আদায় করার জন্য সময় সংকীর্ণ না হয়। যার ওপর ফিতরা ওয়াজিব-কারও কাছে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা অথবা তার সমমূল্যের নগদ অর্থ কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অতিরিক্ত সম্পদ ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সময় বিদ্যমান থাকে, তাহলে তার ওপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে। যার ওপর সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব, তিনি নিজের পক্ষ থেকে যেমন আদায় করবেন, তেমনি নিজের অধীনদের পক্ষ থেকেও আদায় করবেন। এমনকি রমজানের শেষদিনেও যে নবজাতক দুনিয়ায় এসেছে তার পক্ষ থেকেও সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে। আর ঈদের দিন সকালে ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে ফিতরা আদায় করতে হয়। এ বছর সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ: এ বছর বাংলাদেশে জনপ্রতি ফিতরার হার নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা। আর সর্বোচ্চ ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৯৭০ টাকা। জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটি জানিয়েছে যে, ইসলামী শরিয়াহ মতে মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী গম, আটা, খেজুর, কিশমিশ, পনির ও যবের যেকোনো একটি পণ্যের নির্দিষ্ট পরিমাণ বা এর বাজারমূল্য ফিতরা হিসেবে গরিবদের মাঝে বিতরণ করতে পারবেন। গম ও আটার ক্ষেত্রে এর পরিমাণ এক কেজি ৬৫০ গ্রাম (অর্ধ সা)। খেজুর, কিশমিশ, পনির ও যবের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রামের (এক সা) মাধ্যমে সাদাকাতুল ফিতর (ফিতরা) আদায় করতে হয়। এসব পণ্যের বাজারমূল্য হিসাব করে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ফিতরা নির্ধারণ করা হয়। উন্নতমানের আটা বা গমের ক্ষেত্রে ফিতরা এক কেজি ৬৫০ গ্রাম (অর্ধ সা) বা এর বাজারমূল্য ১১৫ টাকা। যবের ক্ষেত্রে (এক সা) ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৪০০ টাকা ফিতরা দিতে হবে। এছাড়া ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম কিশমিশ বা এর বাজারমূল্য ২ হাজার ১৪৫ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করা যাবে। খেজুরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ২ হাজার ৪৭৫ টাকা ও পনিরের ক্ষেত্রে ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজারমূল্য ২ হাজার ৯৭০ টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করতে হবে। ফিতরার পণ্যের স্থানীয় খুচরা বাজারমূল্যের তারতম্য রয়েছে। সে অনুযায়ী স্থানীয় মূল্যে পরিশোধ করলেও ফিতরা আদায় হয়ে যাবে। সুত্রঃ দৈনিক মানবজমিন SHARES ধর্ম বিষয়: