সাতক্ষীরায় কেন্দ্রীয় নেতার সামনে বিএনপির দুই গ্রুপের হাতাহাতি

প্রকাশিত: ১:৪৭ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৩
সাতক্ষীরায় কেন্দ্রীয় নেতার সামনে বিএনপির দুই গ্রুপের হাতাহাতি

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরায় বিএনপির প্রস্তুতি সভায় হাতাহাতি, চেয়ার ছোড়াছুড়ি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে সাতক্ষীরা শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু উপস্থিতিতে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপির দুইটি গ্রুপ।

একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপি সদস্য সচিব আব্দুল আলিম চেয়ারম্যান গ্রুপ ও জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক তারিকুল হাসান গ্রুপের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ৬ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পণ্ড হয়ে যায় আগামী ৪ ফেব্রয়ারী খুলনা বিভাগীয় সন্মেলন উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি প্রস্তুতি সভা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি খুলনা বিভাগী বিএনপির সমাবেশ সফল করতে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় শহরের আমতলা এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির উদ্যোগে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শামসুজ্জামান দুদু। ঘটনার পর তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তিনি এসময় নিজেদের মধ্যে সকল দ্বিধাদ্বন্দ ভুলে যে কোন মূল্যে খুলনা বিভাগীয় মহাসমাবেশ সফল করার আহ্বান জানান।

বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি আসার পর শান্তিপূর্নভাবে সভা চলছিল। এসময় সাতক্ষীরা বিএনপি’র সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের একটি বক্তব্যকে ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এসময় তারা আব্দুল আলিমকে আক্রমন করার চেষ্টা করলে পরে দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক তারিকুল হাসান জানান, আব্দুল আলিমের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের জেরে আজ কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে এমন অঘটন ঘটলো। আব্দুল আলিম তার বক্তব্যে বলেছেন-অবস্থা যেদিকে যাচ্ছে, তাতে যে কোন সময় আমান হত্যার মত হতে পারে। এমন বক্তব্যের পর দলীয় নেতাকর্মীরা তার উপর উত্তেজিত হয়ে  উঠে।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম বলেন, এটা উল্লেখ করার মতো তেমন বিষয় নয়। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে সামান্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহ কমিটির সদস্য সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রউফ, শেখ তারিকুল হাসান, হাবিবুর রহমান হাবিব, মৃনাল কান্তি রায় প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি স্পষ্টত দুই ভাগে বিভক্ত। একটির নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব। তিনি জেলে যাওয়ার পর ওই অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ও তারিকুল হাসান।

অপরগ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. সৈয়দ ইফতেখার আলী ও সদস্য সচিব আব্দুল আলিম। এই দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব বেশ পুরনো। অভ্যন্তরিন কোন্দলনের কারনে দলীয় নেতাকর্মীদের হাতে শিল্পকলা একাডেমিতে খুন হন জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান। বর্তমানে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিগুলো দুইগ্রুপের ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় পালন করতে দেখা যায়।