দু’টি পেশার লোককে সত্য বলতে ও লিখতে হবে: শামীম ওসমান

প্রকাশিত: ১১:০৮ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০২৪

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, আমি স্পষ্ট কথা বলি। দু’টি পেশার লোককে সত্য বলতে ও লিখতে হবে৷ এক যে রাজনীতি করে আর দুই যে সাংবাদিক।  এ দুটি সেক্টর না দাঁড়ালে দেশ ভালো ভাবে চলে না।

মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শামীম ওসমান বলেন, আজকের একটি নিউজ দেখে আমার মন খারাপ হয়ে গেল। গতকাল চট্টগ্রামের ঘটনা, চট্টগ্রামে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে খুন হলেন মা। ছেলেটি তার মায়ের কাছে মাদকের জন্য টাকা চেয়েছে। টাকা না দেওয়ায় মাকে এলেপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে। ঐশী নামের একটা মেয়ে, তার বাবা পুলিশ অফিসার ছিলেন, ঘুমের মধ্যে রাতের বেলা সে তার বাবা ও মাকে জবাই করে দিয়েছিল। এগুলো সামাল দেবে কে? আমি তোমাদের মধ্যে কাকে দেখবো ? সেই ঐশীকে নাকি চট্টগ্রামের ওই ছেলেকে? সিদ্ধান্ত তোমাদের।

তিনি বলেন, লেখাপড়া করছেন করুন। মানুষ হবেন তো? মানুষ হওয়া প্রয়োজন। শিক্ষিতরা মানুষের মত মানুষ হলে আজ ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনিদের গুলি করে মারতো না। এ বছরের জন্য যদি পৃথিবীতে অস্ত্র উৎপাদন বন্ধ থাকে তাহলে কেউ না খেয়ে মরবে না।

‘আমি তোমাদের সাহায্য চাই। আমার বয়স হয়ে গেছে, আমি আর পারি না। অপরাধী যেই হোক না কেন, তোমাদের প্রতিবাদ করতে হবে’।

তিনি আরও বলেন, আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের চেহারা বদলে যাবে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের কাজ এখনো চলছে। এটার সঙ্গে সিদ্ধিরগঞ্জে আরেকটা রাস্তা গেছে, নাগিনা জোহা রাস্তা। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন রাস্তা ১২০ ফুট চওড়া হবে। সেটা চাষাঢ়ায় এসে ইউলুপ হয়ে নাগিনা জোহা সড়কে গিয়ে যুক্ত হবে। তিনটি মেট্রোরেলের লাইন এখানে আসবে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় হবে। নাসিম ওসমান পার্কের এদিকে করার আমার ইচ্ছা, অনেকে নিয়ে যেতে চায়। তবে এটা নিতে পারবে না।

শামীম ওসমান বলেন, বেশিরভাগ বড় কাজ করেছি। তবে শহরে সমস্যা হচ্ছে। চলাফেরা করা যাচ্ছে না। আমি আমার ছোট বোনকে (মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভি) বলেছি চাষাঢ়া থেকে এক নং রেলগেটে ট্রেন দরকার নেই। আমি চাই নারায়ণগঞ্জ ছোট্ট গোছানো শহর হোক। বিদেশে দেখলাম সড়কের ওপর দিয়ে ওয়াকওয়ে করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ ওপর দিয়ে হাঁটাচলা করছে। আমরা অনেক কাজ করেছি। এ কাজ কার জন্য করছি। মাদক খেয়ে মা বাবাকে মেরে ফেলে তার জন্য নাকি তোলারাম কলেজের মেধাবী ছাত্রদের জন্য।

নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান সালমা ওসমান লিপি বলেন, সফলতার জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়। এই যে গরমে বসে কথা শুনলে এটার চেয়েও বেশি কষ্ট করতে হবে। আত্মবিশ্বাস আর অহংকার একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। আত্মবিশ্বাস বলে আমি পারবো, আর অহংকার বলে আমি ছাড়া কেউ পারবে না। আত্মবিশ্বাসের রাস্তা পৌঁছায় সফলতায়। সামনে বাধা আসবে। তোমরা ভেঙে পড়ো না, কখনো রেজাল্ট খারাপ হতে পারে। অনেকেই আছে যারা খারাপ রেজাল্ট নিয়েও এ বিশ্বে সফল হয়েছে।

তিনি বলেন, জীবনে সামনে এগুতে অনেক বাধা আসে। মানুষ ওপরে উঠে গেলে পা ধরে টান দেয় অনেকে। তোমাদের প্রতি আমার আহ্বান, তোমাদের শয়তানকে নিজের ভেতর থেকে বিতাড়িত করতে হবে।

নারায়ণগঞ্জের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল বলেন, আজ তোলারাম কলেজ বাংলাদেশের মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছে, এটাই আমরা চাই। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ আমরা বজায় রাখতে চাই।

শামীম ওসমানের ছেলে তরুণ ব্যাবসায়ী অয়ন ওসমান বলেন, আমরা জানি আমাদের এ কলেজটি শুধু নারায়ণগঞ্জ নয় বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে সংযুক্ত। আমি অনুরোধ করব, এ কলেজের মান সম্মান যেন কেউ নষ্ট করতে না পারে, আমাদের সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

সরকারি তোলারাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের সভাপতিত্বে এসময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বক্তব্য রাখেন।