বাংলাদেশে একটাই ইজতেমা হবে।। সাদপন্থীদের ইজতেমার আর কোনো সুযোগ নেই! প্রকাশিত: ৬:৩৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪ বাংলাদেশে একটাই ইজতেমা হবেঃ মুফতি আমানুল হক বাংলাদেশে একটাই ইজতেমা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তাবলিগের জুবায়েরপন্থিদের শীর্ষ মুরুব্বি মুফতি আমানুল হক। সরকারও এ ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি। বুধবার বিকাল ৩ টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন তিনি। আগামীকাল ইজতেমা ময়দান অভিমুখী লংমার্চের ঘোষণা দিয়ে মুফতি আমানুল হক বলেন, আজ সন্ধ্যার মধ্যে যদি সাদিয়ানি বাহিনী মাঠ ছেড়ে না দেয় তাহলে আগামীকাল সারা বাংলাদেশ ও ঢাকার ৮ পয়েন্ট থেকে আমরা লংমার্চ করে টঙ্গীর মাঠে গিয়ে সমবেত হয়ে জোহরের নামাজ আদায় করব। তারা যদি মাঠ ছেড়েও দেয় আমরা লং মার্চ না করলেও তাদের নামে হত্যা মামলা করবো। আমরা তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাই। মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, জামায়াতে তবলীগের বিভক্তিটা মূলত আমাদের দেশের নয়। এই বিভক্তিটা হলো ভারতের। সারাবিশ্বে দাওয়াতে তবলীগের কাজ এক হয়ে চলছিলো। কিন্তু মাওলানা সাদ সাহেবকে কেন্দ্র করে বিশ্বের প্রতিটি দেশ, শহর, নগর, মসজিদ এবং বাড়িতে বিভক্তি হয়েছে। দাওয়াতে তাবলীগের প্রতিটি ঘর বিভক্ত তার কারণে বিভক্ত। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তিনি বলেন, গত ২৯শে নভেম্বর থেকে ৩রা ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের ৫ দিনের জোর (কর্মী সম্মেলন) ছিলো। আমাদের জোর করার পর তাদের (সাদপন্থী) জোর করার ইচ্ছা হয়। তারা আমাদের জানায় তারাও জোর করবে। আমাদের কাছে প্রশাসনিক প্রজ্ঞাপন ছিলো, ইজতেমা মাঠ আমাদের কাছে থাকবে। ৩১শে জানুয়ারি, ১লা ও ২রা ফেব্রুয়ারি আমরা ইজতেমা করব এবং ৪ঠা ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টায় আমরা সরকারের কাছে মাঠ হস্তান্তর করব। সরকার তাদেরকে ইজতেমা করার সুযোগ দিবে। পরে আবার মাঠ আবার আমাদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে। মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, এজন্য সরকার চিন্তা করেছিলো আমাদের সাথে বসবে। আমাদের কাছে অনুমতি চাইবে। তাই সরকার হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে তাদের কাছে পাঠায়। ওয়াসিফুল ইসলাম, তার ছেলে ওসামা, আব্দুল্লাহ মনসুরসহ কয়েকজন সমন্বয়দের সাথে একটা বৈঠক করে। সেখানে সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ তাদের আশ্বস্ত করে, তারা প্রতিপক্ষের সাথে আলোচনা করে তাদের মাঠ নিয়ে দেয়া হবে। এজন্য আগামী ২০ তারিখ থেকে ৫ দিনের জোর (কর্মী সম্মেলন) করে মাঠ আবার ফেরত দিয়ে দেয়ার শর্ত দেয়া হয়। এতে তারা সম্মতি জানায়। এর ভিত্তিতে গতকাল শেষ রাতে সারজিস ও হাসনাত কাকরাইল মসজিদে আসে আমাদের মুরুব্বিদের সাথে আলাপ করতে। আমাদের সাথে তখন আলাপ চলছিলো। এসময় টঙ্গীর ময়দানে হামলা চালানো হয়। এমনভাবে মেরেছে যেভাবে কোনো পশুকেও মারা হয় না। ঢাকা মেডিকেলে ৪০ জনের আহত রোগী মুমূর্ষু অবস্থায় আছে। আরও বিভিন্ন হাসপাতালে আহত অবস্থায় রয়েছে। সব মিলিয়ে ৪০০ জন সাথী আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি। এসময় ওয়াসিফুল ইসলাম, ওসামা, আব্দুল্লাহ মনসুর, আজিম উদ্দিনসহ মোট ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান তাবলীগ জামায়াতের এই শীর্ষ মুরুব্বি। তিনি বলেন, সরকার তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক যাতে তারা আর এমন ফেতনা না করতে পারে। বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য বর্তমান সরকারকে একটা বিপদের মুখে ফেলে দেয়ার চক্রান্তের বীজ হলো সাদিয়ানী বাহিনী। তারা ভারতের দ্বারা ব্যবহার হচ্ছে। কারণ তাদের আমির ভারতের। তাই সরকারের কাছে দাবি জানাই তাদের বিচার করা হোক। এই কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীতে কেয়ামত পর্যন্ত আর কোনো সাদিয়ানীকে আসতে দেয়া হবে না। সাদপন্থীদের ইজতেমার আর কোনো সুযোগ নেইঃ মাওলানা মামুনুল হক তাবলীগ জামাতের সাদপন্থীদের ইজতেমার আর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন মাওলানা মামুনুল হক। এছাড়া সাদপন্থীদের সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে তাদের নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন তিনি। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ক ম খালিদ হোসেনসহ সাতজন উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে মামুনুল হক এসব কথা বলেন। মামুনুল হক বলেন, জোবায়েরপন্থীরা কোনো বিশৃঙ্খলা চায় না। অনেকে এটাকে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বলছেন। কিন্তু তা নয়। বরং সাদপন্থীরা আমাদের হতাহত করেছে। এই হত্যায় জড়িতদের আজকের মধ্যেই গ্রেপ্তার করতে হবে। মাঠ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাদপন্থীরা টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের পর নতুন করে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে মাঠ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাদপন্থীরা। বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক বৈঠক শেষে সাদপন্থীদের পক্ষে রেজা আরিফ এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সতর্ক করে জানানো হয়েছে যে, দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। এ পরিস্থিতি এড়াতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা ও সংঘর্ষ রোধে সরকারের অনুরোধকে সম্মান জানিয়ে মাঠ ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। SHARES জাতীয় বিষয়: