বাংলাদেশিদের চিকিৎসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলো কলকাতার জেএন রায় হাসপাতাল

প্রকাশিত: ৯:২৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০২৪

কলকাতার জেএন রায় হাসপাতাল অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশে ‘হিন্দু-বিরোধী’ সহিংসতা এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্বারা ভারতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কলকাতার মানিকতলা এলাকায় অবস্থিত হাসপাতালটি ভারতের প্রতি ‘অসম্মানের’ প্রতিক্রিয়া  হিসেবে একটি বিবৃতি জারি করেছে।

হাসপাতালের কর্মকর্তা শুভ্রাংশু ভক্ত বলেন, “আজ থেকে আমরা কোনো বাংলাদেশি রোগীকে ভর্তি করব না। এটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর ‘অত্যাচার’ এবং আমাদের তিরঙ্গার প্রতি ‘অসম্মানের’ প্রতিবাদ। ভক্ত কলকাতার অন্যান্য হাসপাতালগুলোকেও এই পদক্ষেপ  অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশের চট্টগ্রামে হিন্দু মন্দিরগুলোতে হামলার অভিযোগের খবরের পর থেকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। এই আবহে কলকাতার জেএন রায় হাসপাতালের এই পদক্ষেপ সামনে এলো।

শুক্রবার  হরিশ চন্দ্র মুন্সেফ লেন এলাকার শান্তনেশ্বরী মাতৃ মন্দির, শনি মন্দির এবং শান্তনেশ্বরী কালীবাড়ি মন্দিরে ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের  নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ২৪.কম-এর খবর অনুযায়ী, ‘দুপুর আড়াইটার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে যখন কয়েকশ লোকের একটি দল স্লোগান দিতে দিতে মন্দিরে ইট ছুড়ে মারে। কোতয়ালী থানার ওসি আব্দুল করিম বিষয়টি নিয়ে বলেন, ক্ষয়ক্ষতি কম হলেও উত্তেজনা রয়েছে। মন্দির কমিটির সদস্য তপন দাস বলেন, “জুম্মার নামাজের পর শতাধিক মানুষ মিছিল করে এসে হিন্দু-বিরোধী এবং ইসকন-বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। পরিস্থিতির অবনতি হলে আমরা সেনাবাহিনীকে ডেকেছিলাম এবং শেষ পর্যন্ত শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হয়।”

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ইসকনের প্রাক্তন সদস্য চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের পর এই ‘হামলাগুলো’ হয়েছিল।  সোমবার তার গ্রেপ্তার এবং পরবর্তীতে মঙ্গলবার জামিন নামঞ্জুর হওয়ায়  ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং বাংলাদেশের অন্যান্য অংশে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিক্ষোভের জন্ম দেয়। ভারত সরকার ক্রমবর্ধমান ‘সহিংসতা’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংসদকে বলেছেন যে ঢাকাকে সংখ্যালঘুসহ তার সমস্ত নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জয়শঙ্কর বলেন, ‘চরমপন্থী বক্তব্য এবং সহিংসতার বৃদ্ধি অগ্রহণযোগ্য। সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা বাংলাদেশের দায়িত্ব।’

অন্যদিকে  বাংলাদেশ কলকাতায় তার ডেপুটি হাইকমিশনের বাইরে বিক্ষোভের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ভারতকে তার কূটনৈতিক মিশনগুলোকে সুরক্ষিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

 সূত্র : হিন্দুস্থান টাইমস