ছাত্র-জনতার ওপর গুলির ঘটনায় দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ডাকাত আজমীর গ্রেপ্তার প্রকাশিত: ১১:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২৪ নিজস্ব সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসী আজমীরকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার মেজর মো. অনাবিল ইমাম। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানা পুলিশের অস্ত্র চুরি,ডাকাতি,ছিনতাই ও মাদকসহ এক ডজনের বেশী মামলা রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে দাপা ইদ্রাকপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। ডাকাত আজমির দাপা মসজিদ এলাকার যুবলীগ ক্যাডার একাধিক মামলার আসামী ডাকাত শহিদ হোসেনের ছেলে। ফতুল্লা মডেল থানার আফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সশস্ত্র হামলার অভিযোগে ২ টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলার রয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দাপা মসজিদ এলাকার যুবলীগ ক্যাডার শহিদ ওরফে ডাকাত শহিদের পুত্র আজমীর ওরফে ডাকাত আজমীর স্থানীয়দের কাছে আতংকের একটি নাম। পুলিশের অস্ত্র চুরি,ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও চুরি-ডাকাতিসহ এমন কোন ঘৃন্য অপরাধ নেই যা ওদের মাধ্যমে হয়নি। গত ৫ আগষ্ট পরে কিছু দিন পলাতক থাকার পর এলাকায় ফিরে এসে দাপা ইদ্রাকপুর, সাহারা সিটি মাঠ ও ফতুল্লা রেলষ্টেশন এলাকার আশপাশে মাদক বিক্রিসহ চুরি-ডাকাতিসহ বিভিন্ন কার্যকলাপে আবারও যুক্ত হয়ে উক্ত এলাকাবাসীদেরকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বিভিন্ন ছোট-বড় শিল্পকারখানায় এবং ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশপাশি বিভিন্ন বাসাবাড়িতে এ সকল অপরাধগুলো করে বেড়াচ্ছে। এছাড়াও উক্ত এলাকাগুলোর প্রতিটি বাড়ি মালিক ও ভাড়াটিয়াগন ডাকাত আজমীর বাহীনীর কাছে আতংকের দিনানিপাত করছে। স্থানীয়রা আরো জানান, বর্তমানে আমাদের মহল্লাগুলোতে পুলিশের নিয়মিতভাবে টহল না থাকার ফলে ডাকাত আজমীর তার বাহিনী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাদক ব্যবসার পাশাপাশি চুরি-ডাকাতিও শুরু হয়েছে আজমীরের নেতৃত্বে। আমরা সাধারন মানুষগুলো একেবারেই নিরুপায় হয়ে পড়েছি ডাকাত আজমীরসহ তার বাহিনীর কাছে। তারা আরও বলেন, ফতুল্লা মডেল থানা ও ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানায় বহু সংখ্যক মামলা ও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও ডাকাত আজমীর ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়ক পথে (দাপা থেকে পাগলা মেরী এন্ডারসন) নিয়মিত ছিনতাইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন পরিবহন থেকে মালামাল চুরি করে করে থাকে। ডাকাত আজমীরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বিশাল এক বাহিনী । তার নিয়ন্ত্রিত বাহিনীর সদস্যরা ঢাকা-নারায়নগঞ্জ সড়ক পথে চলাচলরত বিভিন্ন মালবাহী পরিবহন থেকে মালামাল চুরি করে। নদীর তীরে ওয়াক ওয়েতে তার বাহিনীর সদস্যরা নিয়মিত জন্ম দেয় ছিনতাইয়ের ঘটনা। সুযোগ বুঝে বিভিন্ন বাসাফ্ল্যাট বাড়ীতে প্রবেশ করে ডাকাতির ঘটনার মতো অপরাধের জন্ম দেয় ডাকাত আজমীর বাহিনীর সদস্যরা। তাছাড়া ডাকাত আজমীর নেতৃত্বে প্রায় সময় নিরীহ মানুষদের কে প্রথমে টার্গেট করে পরে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসা, অটোরিক্সা চুরি সহ নানা অপরাধের জন্ম দিয়ে মানুষের জীবন-যাত্রাকে করে তুলেছিলো অসহনীয় যন্ত্রণাময়। তারা আরও বলেন,২০১৮ সালের ১৩ মে রাতে ফতুল্লা থানার তৎকালীন এএসআই সুমন কুমার সঙ্গীয় ফোর্স সহ দাপা ইদ্রাকপুরস্থ ওরিয়েন্টালের বালুর মাঠে নিয়মিত ডিউটি করাকালীন অবস্থায় কনস্টেবল সোহেল রানার সঙ্গে থাকা একটি রাইফেল চুরি করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে একটি পুকুর থেকে চুরি যাওয়া রাইফেলটি উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের তদন্তে রাইফেল চুরির ঘটনায় আজমীর, পারভেজের (পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত) জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এ ঘটনায় মামলা হয় আজমীরের নামে। ঘটনার তিনদিন পর পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় পারভেজ। এর মাসখানেক পর গ্রেফতার হয় আজমীর। ডাকাত আজমির কে গ্রেফতার করে এলাকায় কিছুটা শান্তি এলেও তার বাহিনীর অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের দাবী জানান এলাকাবাসী। SHARES জেলা/উপজেলা বিষয়: