শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে লাখো মানুষ হত্যা করতে চেয়েছিলেন: আল্লামা মামুনুল হক

প্রকাশিত: ১০:৫২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২৪

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ১৬ বছর অন্ধকার সময়ে আমাদের বুকে চেপে বসেছিল এক জালিম সরকার। মানুষ ভাবতে শুরু করেছিল এদের হয়তো নামানো সম্ভব না। তাদেরও বিশ্বাস ছিল তাদের কেউ নামাতে পারবে না। তারা মসনদকে জবরদখল করে বসেছিল। তাদের ইচ্ছা ছিল লাখো মানুষকে হত্যা করে হলেও শেখ হাসিনা ক্ষমতা চালিয়ে যাবেন।

বুধবার (২১ আগস্ট) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের রুহের মাগফেরাত কামনা ও প্রতিবাদ সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মামুনুল হক আরও বলেন, শেখ হাসিনার বিচার বাংলার মাটিতে করতে হবে। তাকে ধরে আনতে হবে। সব হত্যা ও গণহত্যাকাণ্ডের বিচার আমাদের আদায় করতে হবে। আমরা বলেছিলাম ভাস্কর্য করার দরকার নেই, আপনার বাবাকে আর জাতির সামনে অপমানিত করবেন না। একথা বলায় আমাকে গ্রেপ্তার করলেন, জাতীয় সংসদে আমাকে নিয়ে আক্রমণ করলেন, আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান লেলিয়ে দিলেন। আমাদের কথা সেদিন মানলে আজ সারা দেশে এ লাঞ্ছনা তাদের বরণ করতে হতো না।

তিনি বলেন, আমি আজকে আমাদের প্রিয় ভাই মাওলানা ইকবাল সাহেবকে স্মরণ করছি। তার মৃত্যু আমাকে মর্মাহত করেছে। এটি আমার কারাজীবনের সবচেয়ে হৃদয়বিদারক ঘটনা ছিল। আমি সোনারগাঁ থানা ও বন্দর, গজরিয়া, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার থানার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

তিনি আরও বলেন, যাদের অত্যাচার, অবিচার অতিরিক্ত ছিল তাদের জন্য আল্লাহর রাসূল বলেছেন, কোনো ক্ষমা নেই। সোনারগাঁয়ে শত শত মানুষের ওপর নিপীড়নের জন্য চিহ্নিত কিছু মানুষ দায়ী। তাদের তালিকা করে তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে হবে। এদেশের মানুষের সঙ্গে কাজ করতে হলে তাদের হৃদয়ের আবেগ বুঝতে হবে। ইসলামের বিরুদ্ধাচারণ করে হয়তো ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। কিন্তু ক্ষমতা চিরস্থায়ী হবে না। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে।

দিল্লিতে বসে কেউ যদি স্বপ্ন দেখে শাহজালালের বাংলাদেশকে কেউ নরেন্দ্র মোদীদের স্বার্থের বলি বানাবে। আমরা বলতে চাই রক্ত দিয়ে যেভাবে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেওয়ার পরেও ফ্যাসিবাদের জায়গা বাংলাদেশে হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ কখনও ফ্যাসিবাদকে মেনে নেবে না।

মামুনুল হক বলেন, এ সংগ্রাম জুলাই থেকে শুরু হলো। আগস্টে এসে এটা সফলতায় পরিণত হলো। কিন্তু এর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এ সংগ্রামে অনেক ভাইয়ের রক্ত রয়েছে। ২০০৯ সালে পিলখানায় ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদীর মতো নর ঘাতককে নিয়ে হেফাজতে ইসলাম প্রতিবাদ জানিয়েছিল, এ অপরাধে পাখির মতো গুলি করে আমাদের ভাইদের হত্যা করেছিল। ২০২৪ নির্বাচনেও দেখেছেন গোটা দেশের মানুষকে জিম্মি করে দিল্লির সহায়তায় ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা চালিয়েছিল।কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি। জালিমদের বিদায় এভাবেই হয়।